এবার মার্কিন শিক্ষা বিভাগই তুলে দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২০ মার্চ ২০২৫, ০৫:১২ পিএম | আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম

 

এবার যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগই তুলে দিতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার সেই মর্মে নির্দেশিকা জারি করতে চলেছেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারের সময় শিক্ষা বিভাগ তুলে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতিই এবার কার্যকর করতে চলেছেন। হোয়াইট হাউসের তরফেও সেই মতো প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।

 

বিষয়টি নিয়ে হোয়াইট হাউসের বিবৃতিও তুলে ধরেছে রয়টার্স, যাতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, সকলের কাছেই ব্যর্থ।’ ১৯৭৯ সালে শিক্ষা বিভাগ চালু হওয়ার পর থেকে ৩ লাখ কোটি ডলার খরচ হয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার কোনও উন্নতি হয়নি, তাতে প্রাপ্ত নম্বরেও কোনও উন্নতি চোখে পড়েনি বলে হোয়াইট হাউসের তরফে উল্লেখ করা হয়েছে বলে দাবি রয়টার্সের।

 

আমেরিকার শিক্ষা বিভাগের অধীনে দেশের ১ লাখের বেশি স্কুল রয়েছে। পাশাপাশি, ৩৪ হাজার বেসরকারি স্কুলের উপরও সরকারি তদারকি চলে। সরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষার মান যাতে নেমে না যায়, তার জন্যই পৃথক শিক্ষা বিভাগের সূচনা হয়। তার আগে ১৯৫৩ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জনকল্যাণ একটিমাত্র বিভাগ ছিল। আমেরিকার শিক্ষা বিভাগ কেজি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালায়। পাশাপাশি, কলেজ শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি জমা দিতেও সাহায্য় করা হয়। তাই শিক্ষা বিভাগ বন্ধ হয়ে গেলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষজন শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন, বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলি ইচ্ছে মতো টাকা নেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

ট্রাম্প যদিও নির্বাচনের আগে থেকেই শিক্ষা বিভাগ তুলে দেয়ার পক্ষে সওয়াল করে আসছিলেন। শিক্ষা বিভাগকে তিনি ‘প্রতারণা চক্র’ বলে উল্লেখও করেন। প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালীনও শিক্ষা বিভাগ তুলে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প, সেই সময় কংগ্রেসের সমর্থন পাননি।  দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে আবারও শিক্ষা বিভাগ তুলে দেয়ার পক্ষে সওয়াল করছেন ট্রাম্প। এব্যাপারে ইলন মাস্কের সমর্থন মিলবে কি না, সেই নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। ট্রাম্প এবং তার ধনকুবের উপদেষ্টা এখনও পর্যন্ত একাধিক প্রতিষ্ঠানের ঝাঁপ বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। শিক্ষা বিভাগ তুলে দিতে গেলে আমেরিকার কংগ্রেসের অনুমতি প্রয়োজন। সেনেটে ট্রাম্পের দল রিপালিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটদের তরফেও সমর্থন প্রয়োজন।

 

ডেমোক্র্যাটরা যদিও ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরোধিতা শুরু করে দিয়েছেন। নির্দেশপত্রে ট্রাম্প সই করার আগেই ডেমোক্র্যাটস-পন্থী অ্যাটর্নি জেনারেলদের একটি গোষ্ঠী মামলা দায়ের করেছে। শিক্ষা দফতর তুলে দেয়া, কর্মীদের ছাঁটাই করা, কোনও সিদ্ধান্তই যাতে নিতে না পারেন ট্রাম্প, তার জন্য় আদালতের নির্দেশ চাওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সংগঠন এনএএসিপি ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে অসংবিধানিক বলে উল্লেখ করে। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ডেরিক জনসন বলেন, ‘আমেরিকার লাখ লাখ শিশুদের জন্য কালো দিন। ভাল মানের শিক্ষার জন্য সরকারের উপর নির্ভর করে ছেলেমেয়েরা। বিশেষ করে দরিদ্র এবং গ্রামীণ সমাজের মানুষজন। তারা ট্রাম্পকে ভোটও দিয়েছিলেন।’ সূত্র: রয়টার্স।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

দিল্লিতে বিচারপতির বাংলো থেকে টাকা উদ্ধার নিয়ে নতুন নাটক
বিষক্রিয়ার আশঙ্কা, ভারতের বাজার থেকে সরানো হল কয়েক হাজার কাশির ওষুধ
আরও ২৯৫ ভারতীয়কে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ইউটিউব দেখে নিজেই নিজের পেট কেটে ১১টা সেলাই যুবকের!
মহাকাশে হীরার গ্রহের সন্ধান, অবাক নাসার বিজ্ঞানীদের
আরও
X

আরও পড়ুন

নিকলী খেলাফত মজলিসের আলোচনা ও ইফতার অনুষ্ঠিত

নিকলী খেলাফত মজলিসের আলোচনা ও ইফতার অনুষ্ঠিত

পুরো মাহে রমজান উপলক্ষে ফ্রি ইফতার বিতরণ

পুরো মাহে রমজান উপলক্ষে ফ্রি ইফতার বিতরণ

দিল্লিতে বিচারপতির বাংলো থেকে টাকা উদ্ধার নিয়ে নতুন নাটক

দিল্লিতে বিচারপতির বাংলো থেকে টাকা উদ্ধার নিয়ে নতুন নাটক

বিষক্রিয়ার আশঙ্কা, ভারতের বাজার থেকে সরানো হল কয়েক হাজার কাশির ওষুধ

বিষক্রিয়ার আশঙ্কা, ভারতের বাজার থেকে সরানো হল কয়েক হাজার কাশির ওষুধ

আরও ২৯৫ ভারতীয়কে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আরও ২৯৫ ভারতীয়কে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আগামী নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে : সাঈদ সোহরাব

আগামী নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে : সাঈদ সোহরাব

ইউটিউব দেখে নিজেই নিজের পেট কেটে ১১টা সেলাই যুবকের!

ইউটিউব দেখে নিজেই নিজের পেট কেটে ১১টা সেলাই যুবকের!

জমানো টাকার যাকাত প্রদান প্রসঙ্গে।

জমানো টাকার যাকাত প্রদান প্রসঙ্গে।

রাস্তা সংস্কার চাই

রাস্তা সংস্কার চাই

ইতিকাফের ফজিলত

ইতিকাফের ফজিলত

অবিলম্বে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক

অবিলম্বে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক

হয়রানিমূলক মামলা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

হয়রানিমূলক মামলা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রশ্ন : আমার মা গত ২০১৭ সালে দীর্ঘ দিন কিডনি, ক্যান্সারসহ নানা জঠিল রোগে ভুগে আমার উপর বেশ রাগ, অভিমান নিয়ে মারা গেছেন। মা খুব অসহায় অবস্থায় মারা যান। বড় সন্তান হিসেবে তার প্রতি দায়িত্ব পালন করিনি। অনেক অবহেলা করেছি, রাগারাগি করেছি, তার চিকিৎসাও ঠিকমতো করিনি। আমি এখন খুব মর্মাহত, ক্ষমা পাওয়ার উপায় আছে কি?

প্রশ্ন : আমার মা গত ২০১৭ সালে দীর্ঘ দিন কিডনি, ক্যান্সারসহ নানা জঠিল রোগে ভুগে আমার উপর বেশ রাগ, অভিমান নিয়ে মারা গেছেন। মা খুব অসহায় অবস্থায় মারা যান। বড় সন্তান হিসেবে তার প্রতি দায়িত্ব পালন করিনি। অনেক অবহেলা করেছি, রাগারাগি করেছি, তার চিকিৎসাও ঠিকমতো করিনি। আমি এখন খুব মর্মাহত, ক্ষমা পাওয়ার উপায় আছে কি?

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো কী বলছে?

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো কী বলছে?

মাহে রমজান : অর্জন-বর্জন ও ঈমান নবায়ন

মাহে রমজান : অর্জন-বর্জন ও ঈমান নবায়ন

রমজান : মুমিন হৃদয়ের বসন্ত

রমজান : মুমিন হৃদয়ের বসন্ত

মহাকাশে হীরার গ্রহের সন্ধান, অবাক নাসার বিজ্ঞানীদের

মহাকাশে হীরার গ্রহের সন্ধান, অবাক নাসার বিজ্ঞানীদের

রমজানের রোজা যেভাবে ফরজ হলো

রমজানের রোজা যেভাবে ফরজ হলো

অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে যাকাতের ভূমিকা

অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে যাকাতের ভূমিকা

মূকাভিনয় দিবসে মূকনাট্য ‘ম্যাকবেথ’

মূকাভিনয় দিবসে মূকনাট্য ‘ম্যাকবেথ’